এই প্রবাদটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত। ৩৫তম বিসিএসের রিটেনেও এবার এটি এসেছে। প্রবাদটির অর্থ বলার আগে গোড়ার কাহিনীটি জানা যাক
কাহিনী
হিন্দু পৌরণিক চরিত্র নরকের অধিপতি হলেন যম। ইনি যমরাজ বা ধর্মরাজ নামেও পরিচিত। ব্রহ্মার নির্দেশে তিনি মনুষ্য আত্মাকে পাপ পুণ্য ভেদে স্বর্গ বা নরকে প্রেরণ করে থাকেন।সমস্যা হল স্বর্গ, মর্ত্য, পাতাল এই ত্রিভুবনের সকল প্রানীর হিসেব তাঁর একার পক্ষে রক্ষা করা খুব কষ্টদায়ক ছিল আর তাতে ভুল ভ্রান্তি ও হত। তিনি ব্রহ্মাকে তাঁর সমস্যার কথা নিবেদন করলেন। যমরাজের সমস্যার সমাধানকল্পে ব্রহ্মা ধ্যানমগ্ন হলেন। প্রায় সহস্রবছর তিনি ধ্যানমগ্ন রইলেন। এই ঘ্যানমগ্ন অবস্থায় তাঁর শরীরের তেজ হতে দোয়াত কলম সহ চিত্রগুপ্তের জন্ম হয়।
যেহেতু ব্রহ্মার শরীর বা কায়া হতে তাঁর উদ্ভব তাই ব্রহ্মার নির্দেশে তিনি হলেন কায়স্থ। বলা হয়ে থাকে হিন্দুদের মধ্যে যারা কায়স্থ, তাদের মধ্যে আদি কায়স্থ হলেন চিত্রগুপ্ত। আর যেহেতু ব্রহ্মা প্রথমে তাঁকে মনের গহীনে চিত্রিত করে ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন আর অনেকটা গোপনেই তাঁর জন্ম তাই তাঁর নাম হল চিত্রগুপ্ত।
ব্রহ্মার নির্দেশে তিনি চন্ডীর তপস্যা করে পরোপকারী স্বাধীন ও চিরজীবী হবার বড় লাভ করেন আর যমরাজের সহকারী হিসেবে মানুষের পাপপুণ্য হিসেব করেন।
এই ত্রিভুবনের সকল জীবের পাপপুণ্য, আয়ু ইত্যাদির হিসেব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তিনি সংগ্রহ করেন। অবিরাম চলা তাঁর এই হিসেবে কোনরূপ ভুল হয়না।সযত্নে গুপ্তভাবে রক্ষিত খাতায় চিত্রগুপ্ত মানুষের পাপপুণ্য, আয়ু ইত্যাদির নির্ভুল হিসেব লেখেন আর যমকে তাঁর বিবরণী প্রদান করে সহায়তা করেন।
অর্থঃ হিসেবের নড়চড় হয়না বলেই মানুষ কোন কাজ করার আগে পাপপূন্যের হিসেব করে। কারন সবার আগে তাঁর চিন্তায় চিত্রগুপ্তের খাতা ভেসে আসে। তাই এই প্রবাদটি দ্বারা খুঁটিনাটি হিসাব — স্বচ্ছ্ব কঠিন ও নির্ভুল হিসেবকেই নির্দেশ করা হয়।
তথ্যসূত্র
১। উইকিপিডিয়া
ওম প্রকাশ চৌধুরী
সহকারী পরিচালক
বাংলাদেশ ব্যাংক
ISM Cell