“কাম” এমন একটি ব্যপার যাকে নাকি সাধারণ মানুষের পক্ষে জয় করা প্রায় অসম্ভব ব্যপার। অনেক মুনি ঋষির তপস্যার লব্ধ ফল এই “কাম”এর কারনে বিনষ্ট হয়েছিল।
কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রেও রাজাদের জন্য ইন্দ্রিয়জয়ের ব্যপারে গুরুত্বআরোপ করা হয়েছিল।
“ইন্দ্রিয়জয়” টার্মটি ব্যাখ্যা করছিঃ
” কর্ণ দ্বারা শব্দ, ত্বক দ্বারা স্পর্শ, নেত্র দ্বারা রূপ, জিহ্বা দ্বারা রস ও ঘাণেন্দ্রিয় দ্বারা গন্ধ” এগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ হল ইন্দ্রিয়জয়। আর কাম, ক্রোধ, লোভ, মাণ, মদ ও হর্ষ এগুলো বর্জনের দ্বারা এই ইন্দ্রিয়জয় আয়ত্তে আনতে হয়।
ষড়ঋপুর ব্যপার গুলো একটু ব্যাখ্যা করা যাকঃ
পরস্ত্রী বিষয়ক অভিলাষ হল কাম, হিংসার প্রবর্তক যে চিত্তবিকার তার নাম ক্রোধ, পরের দ্রব্য গ্রহনের ইচ্ছার নাম হল লোভ, মূর্খতাবশতঃ নিজের মধ্যে উৎকৃষ্টত্ব বুদ্ধিকে বলা হয় মাণ। ধন, বিদ্যা প্রভৃতি থেকে উৎপন্ন গর্বকে বলা হয় মদ, ঈপ্সিত বস্ত প্রাপ্ত হয়ে তার উপভোগের ফলে যে প্রীতি তার নাম হর্ষ।
পোরণিক কাহিনী থেকেই দেখা যায়, মহাভারতে দূর্যোধন আত্মাভিমানবশতঃ পান্ডবগণকে রাজ্য ফিরিয়ে না দিয়ে নিজের বংশের ধ্বংস ডেকে আনেন। আর লঙ্কা রাজ রাবণ সীতাকে ফিরিয়ে না দিয়ে নিজ রাজ্যের ধ্বংস ডেকে আনেন।
অতএব পরস্ত্রী, পরদ্রব্য, পরহিংসা, অযাচিত নিদ্রা বা স্বপ্নদর্শন,চাঞ্চল্য, মিথ্যাবাদিত্ব, অবিনীতের ন্যায় বেশধারণ ও অনর্থকর কিছু করা থেকে রাজন্যবর্গকে দূরে থাকতে চাণক্য পরামর্শ দিয়েছিলেন।
—কৌটিলীয়ম অর্থশাস্ত্রমঃ প্রথম অধিকরণঃ বিনয়াধিকারিকমঃ৩য় প্রকরণ