কিছু কথাঃ
আওরঙ্গজেব বা আলমগীর ছিলেন “সর্বশেষ শক্তিমান” মোগল সম্রাট। মূলত তাঁর মৃত্যুর পর থেকে আর কোন মোগল সম্রাট মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারেনি।তিনি খুব সাধারন লাইফ লীড করতেন এবং নিজের হাতে কোরান শরীফ নকল করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। ১৭০৭ সালের ৩রা মার্চ তিনি ইন্তেকাল করেন।
উইলের কথাঃ
মূলত তাঁর নিজের হাতে করা উইলখানি তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর বালিশের নীচে পাওয়া যায়।তাছাড়া আহকাম-ই-আলমগিরিতে তাঁর আরেকটি উইল পাওয়া গিয়েছিল। তাঁর উইলের লেখা থেকে আমার পছন্দের অংশটুকু শেয়ার করছিঃ
১। আমার টুপি সেলাইয়ের চার টাকা দুই আনা গচ্ছিত আছে মহলদার আইয়া বেগের কাছে। ওটা দিয়ে ক্রয় করো অসহায় এই জীবের কাফনের কাপড়। কুরআন নকলের তিনশো পাঁচ টাকা রাখা আছে আমার থলিতে। আমার মৃত্যুর দিন ওটা বিতরণ করো ফকিরদের মধ্যে। যেহেতু কুরআন নকলের মাধ্যমে উপার্জিত টাকা শিয়ারা সুনজরে দেখে না, ওটা যেন ব্যয় করোনা আমার কাফনের কাপড় কেনা কিংবা অন্য কোন প্রয়োজনে।
২। রাজ্যের একজন শাসকের উচিত যথাসম্ভব এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বিচরণ করা; তাঁর একটি স্থানে দীর্ঘদিন অবস্থান করা উচিত নয়, কারন এটা তাঁকে বিশ্রাম দিলেও বয়ে আনে হাজারটা ঝামেলা।
৩। তোমার পুত্রদের অন্ধের মত বিশ্বাস করোনা, লালন করোনা তাদের অতিরিক্ত আদরে, কারন সম্রাট শাহজাহান যদি দারাশেকোহকে মাত্রাতিরিক্ত আদর না দিতেন, তাহলে শোচনীয় ঐ পরিণতি তাঁকে বরন করতে হতনা। সব সময় মনে রেখো, “রাজার বাণী হল নিষ্ফলা এবং নিষ্প্রভ”
৪। সরাকারি শক্তির প্রধান স্তম্ভ হল রাজ্যের ঘটনাবলী সম্বন্ধে ওয়াকিফহাল থাকা। এক মুহূর্তের অবহেলা পরিণত হয় দীর্ঘ বছরের অপমানে। শয়তান শিবা (খুব সম্ভবত শিবাজী) পালাতে পেরেছিল আমারই অবহেলায়, আর তার ফলে মারাঠিদের নিয়ে আমাকে ভুগতে হয়েছে আজীবন।
তথ্য সূত্রঃ
১।উইকিপিডিয়া
২। সম্রাট আওরঙ্গজেবের ভিতর-বাহিরঃ জয়নাল হোসেন।