১৭৭২ সালে ফারাসী অধিকৃত চন্দননগরে মঁসিয়ে লুই বোনার্দ শুরু করলেন নীল চাষ, নীলের তখন প্রচন্ড দাম, মণ ৩০ টাকা, লন্ডনের বাজারে ৩ থেকে ৪ গুণ বেশী দামে বিক্রি করা যায়, আর সাহেবরা চাষীদের দিচ্ছে মাত্র ৪টাকা করে।
নীলকর সাহেবদের এই অত্যাচারের কথা বাংলাদেশের মানুষ প্রথম জানতে পারে “হিন্দু পেট্রিয়ট” নামের এক কাগজ থেকে যার সম্পাদক ছিলেন হরিশ্চন্দ্র মুখোপাধ্যায় । নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে তার কলম ছিল সবচেয়ে ধারালো। ১৮৬১ সালে হরিশ্চন্দ্র মারা যান । এদিকে গন্ধর্বনারায়ণ, যিনি পরবর্তীতে দীনবন্ধু মিত্র নামে পরিচিত হন লিখলেন নীলদর্পণ। মনে করা হয়ে থাকে গ্রন্থটিকে’ Nil Darpan or The Indigo Planting Mirror’ (১৮৬১) নামে ইংরেজি অনুবাদ করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত এবং নিজের ঝুঁকিতে ছাপিয়েছিলেন রেভারেন্ড জেমস লঙ। সাহেবরা গেলেন চটে। আদালতে লঙ সাহেবের বিরুদ্ধে মামলা হলো, বিচারে লঙ সাহেবকে ১০০০ টাকা জরিমানা করা হলো (অনুবাদকের নাম না থাকায় তাঁর জরিমানা করা যায়নি)। তখনকার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সাহিত্যিক ( হুতোম প্যাঁচার নক্শা রচয়িতা) কালীপ্রসন্ন সিংহ এ জরিমানার টাকা আদালতে উপস্থিত হয়ে পরিশোধ করেন।
সেই সময়ের একটি প্রচলিত ছড়া
নীল বাদরে সোনার বাংলা
করলো এবার ছারেখার
অসময়ে হরিশ মলো,
লঙের হল কারাগার
প্রজার আর প্রাণ বাঁচানো ভার।.