পর্ব-৫
**দারিদ্র্য, অসুস্থতা, দুঃখবোধ,কারারুদ্ধতা এবং অন্যান্য পাপ উৎপন্ন হয় নিজের কৃত পাপ বৃক্ষ থেকে
**মানুষেরা তাদের প্রয়োজন মোতাবেক ফল চয়ন করে, প্রজ্ঞাবানেরা তাদের প্রয়োজনীয় নির্যাস গ্রহণ করে পূর্ববর্তীদের সম্পাদিত কার্যকলাপের আলোকে, এমনকি প্রজ্ঞাবানেরা পরিবেশ পরিস্থিতি অবলোকনান্তে পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
**যদি নিজ কৃতকর্মের দ্বারা এ ধরিত্রীতে যথার্থ ভূমিকা পালন করতে চাও তা হলে; পঞ্চইন্দ্রিয় তথা- দৃষ্টি, গন্ধ, শব্দ, স্বাদ এবং স্পর্শ –পঞ্চঅঙ্গ তথা-কান,চোখ,নাক, কন্ঠ এবং ত্বক। চলমান অঙ্গ তথা- হাত, চরণ, মুখ, সঙ্গমাদি এবং শিশ্ন তথা এই পনেরটি অনুসঙ্গের উপর নিজের নিয়ন্ত্রণ আরোপ কর।
**তিনিই বিদ্বান যিনি সমাবেশে প্রয়োজনীয় কথা বলেন, নিজের সামর্থ অনুযায়ী সেবা প্রদান করেন এবং যিনি তার ক্রোধের পরিসীমা সম্পর্কে অবহিত।
**একজন জ্ঞানী লোকের কখনো পথ্য প্রস্তুত প্রণালীর নির্দেশিকা, সম্পাদিত দান দাক্ষিণ্য, পারিবারিক কলহ, স্ত্রীর সাথে কৃত গোপনীয় ক্রিয়াকর্ম, অন্যের সরবরাহকৃত বিস্বাদপূর্ণ খাদ্য এবং শ্রুত গালাগাল সম্পর্কিত কোনো বিষয় প্রকাশ করা উচিৎ নয়।
** কোকিলেরা বিভিন্ন ঋতুতে দীর্ঘ সময়ব্যাপী নীরবতা পালন করে থাকে, বসন্তে যখন তারা সুমধুর স্বরে গান শোনানোর সক্ষমতা অর্জন করে তখনই অন্যদের গান শুনিয়ে বিমোহিত করে।
** চারিত্রিক ভাবমূর্তির কারণে কোনো মহান ব্যক্তির মন্দ কাজও সমালোচিত হয়না এবং নীচু লোকের ভালো কাজও প্রশংসিত হয়না। বিবেচনা করে দেখ; অমৃত আস্বাদন খুব আনন্দদায়ক হলেও তা রাহুর নাশ করে দেয়, আবার বিষ পান অত্যন্ত ক্ষতিকারক হলেও শিব যখন তা পান করেন তখন সে বিষও নীলকন্ঠ হার হয়ে যায়।
** উপলব্ধির অভাব বা অদর্শন হেতু মূল্যবান রত্নও মানুষের পায়ের কাছে ধূলিতে পড়ে থাকতে পারে, আবার কাচের টুকরো ও মুকুটে শোভা পেতে পারে। কিন্তু আমরা কল্পনাও করতে পারিনা যে, মূল্যবান রত্ন মূল্যহীন হয়ে গেছে এবং কাচের টুকরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যখন কোনো ব্যক্তির সম্মুখে এ সম্পর্কিত বিচারিক সমস্যা উদ্ভূত হয় তখন উভয়ে নিজ নিজ গুণানুযায়ী মূল্যায়িত হয়ে থাকে।
**যে ব্যক্তি নোংরা পোশাক পরিধান করে, যার দাঁত নোংরা, অতি লোভার্ত, অসঙ্গত কথা বলে এবং সূর্যোদয়ের পরে নিদ্রিত থাকে, সে ব্যক্তি বিশাল ব্যক্তিত্বশালী হলেও প্রাচুর্য থেকে বঞ্চিত হয়।
তথ্যসূত্রঃ এবং কৌটিল্যের নীতিশাস্ত্র – মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক